২০২৫ সালের এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার ফলাফলে গোদাগাড়ী উপজেলার সার্বিক চিত্র আশানুরূপ নয়। এবারের ফলাফলে উপজেলাজুড়ে এইচএসসি এইচএসসি , আলিম ও আলিম পরীক্ষায় পাশের গড় পাশের হার, ৩৫.৯% এবং আলিম পরীক্ষায় পাশের হার, ৪৪.৯৭% । এ অবস্থায় গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব ফয়সাল আহমেদ ফলাফলে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার ১২টি কলেজের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সর্বোচ্চ পাশের হার অর্জন করেছে গোদাগাড়ী মহিলা ডিগ্রি কলেজ (৬৯.০৪%), আর সর্বনিম্ন ফলাফল চরবিশ্বনাথ নগর স্কুল এন্ড কলেজ (১৯.৫০%)। পাঁচটি মাদরাসার মধ্যে সর্বোচ্চ পাশের হার ৭৮.৯৫% কাঁকনহাট ফাজিল মাদরাসা ।
এই ফলাফল নিয়ে পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, গোদাগাড়ী (PUSAG)-এর এক প্রতিনিধি বলেন,“উপজেলার অনেক কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পর্যাপ্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক—তিন পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি রয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, যারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে ও নিয়মিত পরামর্শ নেয়, তারা তুলনামূলক ভালো ফলাফল করেছে। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আরও সচেতন হবেন এবং আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন।”
এ প্রসঙ্গে PUSAG-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব হোসেন মিঠু বলেন, “গোদাগাড়ী উপজেলার শিক্ষার মান সন্তোষজনক নয়। শিক্ষা ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সব শিক্ষককে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা ও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাব যেন কোনোভাবেই শিক্ষার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, সেটিও প্রশাসনকে তদারকি করতে হবে।”
“আমরা আশা করি, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে গোদাগাড়ীর শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। ইনশাআল্লাহ, পুসাগ সর্বদা শিক্ষা উন্নয়নের পাশে থাকবে,” — তিনি আরও যোগ করেন।
এদিকে, পুসাগ-এর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আব্দুল হাসিব বলেন, “আমাদের এলাকার শিক্ষার হার দিন দিন কমে যাচ্ছে—এটা সত্যিই উদ্বেগজনক। শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক, অভিভাবক, প্রশাসন ও ছাত্রসমাজ—সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। একমাত্র সমন্বিত প্রচেষ্টাই গোদাগাড়ীর শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
গোদাগাড়ী উপজেলার শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রশাসন, শিক্ষক সমাজ এবং সামাজিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি। শিক্ষা সচেতনতা বৃদ্ধিতে পুসাগ-এর কার্যক্রম আগামী দিনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন অনুপ্রেরণা জাগাবে—এমনটাই আশা স্থানীয় জনগণের।