বিশ্ববাজারে স্বর্ণের চলমান মূল্যবৃদ্ধি ও বিনিয়োগ ঝুঁকি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জেপি মর্গান ব্যাংক সম্প্রতি ভীতিকর এক পূর্বাভাস দিয়েছে। ব্যাংকের বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের চতুর্থ প্রান্তিক শেষে প্রতি আউন্স স্বর্ণের গড় দাম ৫৫৫৫ ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এ পূর্বাভাস এসেছে বিনিয়োগকারীর চাহিদা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয় এবং বৈশ্বিক শঙ্কার প্রেক্ষাপটে। জেপি মর্গানের গ্লোবাল কমোডিটি স্ট্র্যাটেজির প্রধান নাতাশা কানেভা জানান, “স্বর্ণ ২০২৫-২৬ সালের জন্য সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী বিনিয়োগ। ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে গেলে স্বর্ণের দাম আরও বেড়ে যাবে।”
বিশ্লেষক গ্রেগরি শিয়ারার বলেন, সুদের হার কমানো, স্থবির মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা, ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং ডলারের বৈচিত্র্যকরণের প্রবণতায় স্বর্ণ বাজারে নতুন শক্তি যোগ করছে। বর্তমান স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্সে স্বর্ণের দাম ৪৩৮১ ডলার ছাড়িয়েছে, যা ২০২৫ সালের সূচনাপর্যায় থেকে ৫৭% বৃদ্ধি; এটি ১৯৭৯ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক পারফরম্যান্স।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীরা এখন ধীরে ধীরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে স্বর্ণকে বেশি মূল্য দিচ্ছে, “ডি-ডলারাইজেশন নয়, বরং ডলার বৈচিত্রকরণ” হচ্ছে। প্রতি কোয়ার্টারে স্বর্ণের চাহিদা ৫৬৬ টন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে রিপোর্টে জানানো হয়। ২০২৮ সালের মধ্যে আউন্সপ্রতি দাম ৬ হাজার ডলারের ধারে-কাছে পোঁছাবে, এমন দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চলমান মূল্য সংশোধন স্বাভাবিক, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি দর্শনে স্বর্ণই নিরাপদ সম্পদ ও অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ পছন্দের কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ নিচ্ছে।