চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় জুলাই মাসের শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ। শুক্রবার আয়োজিত এই কর্মসূচির প্রধান অতিথি ছিলেন বন সংরক্ষক (চট্টগ্রাম অঞ্চল) ড. মোল্যা রেজাউল করিম। কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রায় ৮ একর বনভূমিতে ৩২০০টি শিমুল চারা রোপণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগের নামকরণ করা হয়েছে ‘জুলাই শহীদ স্মরণ ও স্মৃতি শিমুল বাগান’।
প্রধান অতিথি তার সামিজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, শিমুল বসন্তের ফুল—রক্ত রঙিন আগুন ঝরিয়ে তার পুষ্পপত্রে ফুটিয়ে তোলে সময়ের স্মৃতিময় হাজারো কাব্য কথা। পত্রঝরা শাখাগ্রে রক্তের বার্তা নিয়ে শিমুল যেন ঘোষণা করে শহীদের দ্রোহ ও আত্মত্যাগের না-বলা গল্প। ফাগুনের মাতাল সমীরণে যখন উদাস হয় মানবিক সত্তা, তখন শিমুলের ডালে ডালে ফুটে ওঠা রক্তরাঙা ফুল শুধু বসন্তের আগমনী বার্তাই নয়—এটি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির জন্য আত্মোৎসর্গ করা শহীদদের এক অনন্য স্মারক। আমাদের শহীদদের বুকের তাজা রক্তের লাল রং এই বাংলার মাটি বারবার পবিত্র করেছে। সেই রক্তের ধারা মিশে গেছে প্রকৃতির চিরন্তন বার্তায়, যা শিমুল ফুলের পাপড়িতে হয়ে ওঠে আরও প্রাণবন্ত ও আবেদনময়ী। প্রতিবার শিমুল ফোটে, আমাদের মনে করিয়ে দেয় দেশপ্রেমের সৌন্দর্য, আত্মত্যাগে বলীয়ান হওয়ার প্রেরণা আর জাতির অকুতোভয় সন্তানদের বীরত্বগাথা। ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের মতো জাতির গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সূর্যসন্তানরা দেশ রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে রাজপথ, সিক্ত হয়েছে তৃষিত জমিন। সেই সুমহান স্মৃতি ও বীরত্বের চেতনাকে ধারণ করেই ‘শিমুল বাগান’ সৃজন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এই বাগান শুধু বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নয়—এটি হবে জাতির বীর সন্তানদের স্মৃতি সংরক্ষণ, দেশপ্রেম জাগরণ এবং পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির এক অনন্য প্রতীক।